|| বাংলার নবাবের ওয়েবসাইটে স্বাগতম ||
আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া | ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া।

বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১১

চায়ের পিয়াসী


চায়ের পিয়াসী

-কাজী নজরুল ইসলাম
চায়ের পিয়াসী পিপাসিত চিত আমরা চাতক দল।
দেবতার কন সোমরস যারে সে এই গরম জল।।
চায়ের প্রসাদে চার্বাকর ঋষি বাক্-রণে হ’ল পাস,
চা নাহি পেয়ে চার-পেয়ে জীবন চর্বন করে ঘাস।
লাখ কাপ চা খাইয়া চালাক
হয়, সে প্রমাণ চাও কত লাখ?
মাতালের দাদা আমরা চাতাল, বাচাল বলিস্ বল।।
চায়ের নামে যে সাড়া নাহি দেয় চাষাড়ে তাহারে কও,
চায়ে যে ‘কু’ বলে চাকু দিয়া তার নাসিকা কারিয়া লও।
যত পায় তত চায় ব’লে তাই
চা নাম হ’ল এ সুধার ভাই।
চায়ের আদর করিতে, হল দেশে চাদরের চল।।
চা চেয়ে চেয়ে কাকা নাম ভুলে পশ্চিমে চাচা কয়,
এমন চাযে গে মারিতে চাহে সে চামার সুনিশ্চয়।
চা করে করে ভৃত্য নফর
নাম হারাইয়া হইল চাকর,
চা নাহি খেয়ে বেচারা নাচার হয়েছে চাষা সকল।।
চায়ে এল যায় চাল্-কুমড়ো সে, চাঁদা করে মার চাঁটি,
চা না খাইয়র চানা খায় আজ দেখহ অশ্ব জাতি।
একদা মায়ের মুন্ডেতে শিব
চা ঢে’লে দেন; বের করে জিভ
চা-মুন্ডা রূপ ধরিলেন দেবী সেইদিন রে পাগল।।
চায়ে পা ঠেকিয়া সেদিন গদাই পড়িল মোটর চাপা,
চাঁট ও চাটনী চায়েরই নাতলি, লুকাতে পার কি বাপা?
চায়ে মর্ ব’লে গালি দিয়ে মাসি
চামর ঢুলায় হয়ে আজ দাসী,
চাটিম্ চাটিম্ বুলি এই দাদা চায়ের নেশারই ফল।।