জয়েনিং লেটার হাতে পেয়ে খুশি হয়না এমন মানুষ কি খুঁজে পাওয়া সম্ভব? বলছি না যে আমি এর ব্যাতিক্রম। আমিও অনেক আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু সেই আনন্দকে দীর্ঘস্থায়ী করার খুব একটা সুযোগ আমার ছিলোনা। জয়েনের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদি সংগ্রহ, দুজন গেজেটেড অফিসারের সন্ধান করা, ইন্ট্রোডিউসারের জন্য জয়েন করাটা প্রায় পিছিয়ে যাওয়া (যদিও শেষ পর্যন্ত পিছায়নি), অবশেষে জয়েন করা, পোস্টিং পাওয়া, নতুন অফিসে যাওয়া -- এসবই তো হলো ৩১তম বিসিএস-এর রিটেন এক্সাম চলাকালীন সময়ে। দম ফেলার ফুরসৎ ছিলোনা।
সারাদিনের কাজ শেষে বাসায় ফিরে রাতে পরের দিনের এক্সামের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। বেশ নিরন্তর পরশ্রম বলা চলে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তো থাকতাম এক্সাম হলে, বিকালে জয়েন করার জন্য জনতা ব্যাংক লিমিটেডের খুলনা এরিয়া অফিসে; আর রাতে বাড়ি ফেরা। তবে এগারো তারিখের (অক্টোবর '১১) কথা বলতেই হয়। কি ধকলই না গিয়েছিলো এদিন! এখান থেকে ওখানে, ওখান থেকে সেখানে। শুধু ছুটোছুটি। ধন্যবাদ দিয়ে শোয়েবকে ছোট করবোনা। সারাটা দিন ও আমার সাথে ছিলো, ওর পঙ্খীরাজে চড়েই দিনের ছূটোছুটির সমাপ্তি টানতে পেরেছিলাম। এগারই অক্টোবর ২০১১ -আমার জন্য তাই অতীব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম চাকরির জয়েনিং।
আমার ব্রাঞ্চে জয়েন করেছিলাম তের (১৩) তারিখে। তখনো এক্সাম চলছিলো। বিসিএসের এক্সাম শেষ হওয়ার একদিন পরেই ছিলো মিডটার্ম (এমবিএ থার্ড টার্ম) এক্সাম। “নতুন চাকরী বা নতুন অফিস কেমন লাগছে?”-- এটা একটা কমন কোয়েশ্চান। আমার জন্য উত্তর দেয়াটা অবশ্য খুব সিম্পল ছিলো। “ভালো, বেশ ভালো”। এই ভালো বলাটা শুধু এজন্যই নয় যে এটা আমার প্রথম চাকরী। বরং, ভালোলাগার মতই ভালো। কিছু কারণ অবশ্য রয়েছে।
“ইউ উইল নেভার গেট দ্য সেকন্ড চান্স টু মেক দ্য ফার্স্ট ইম্প্রেশান”। কথাটা খুব মেনে চলি আমি। আর হ্যাঁ, প্রথম সাক্ষাতেই আমি ইম্প্রেস করেছিলাম আমার ম্যানেজারকে। ব্যাস হয়ে গেলো। ওটুকুই যথেষ্ট। ম্যানেজার ইম্প্রেস্ড্, আমিও তার কেয়ারে ইম্প্রেস্ড্।
আরেকটা বিশেষ কারণের কথা বলতেই হয়। ভবঘুরে জিবনে সারাদিন সময় কাটতো চ্যাটিং আর সোস্যাল নেটওয়ার্কিং করে। ভেবেছিলুম, অন্তত দিনের বেলাতে এগুলোকে বিদায় জানাতে হবে। কিন্তু ম্যানেজারের কল্যাণে সেটা পেয়েছিলাম আমার চাকরী জিবনের তৃতীয় দিনেই। অলটাইম ফ্রি একসেস্ টু আনলিমিটেড ইন্টারনেট। আমার মত নেটিজেনের জন্য আর চে' আনন্দের খবর আর কি হতে পারে?
সেই থেকেই চলছে। অফিসওয়ার্ক আর চ্যাটিং-নেটওয়ার্কিং... ভালোই চলছে গুরু!
ও হ্যাঁ, একটা কথা বলতেই ভুলে গিয়েছিলাম। আমার পোস্টিং দিয়েছে আমার বাড়ির পাশে। সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ রগড়াতে রগড়াতে অফিসে যাই... আর সন্ধ্যায় হাট হাটতে ফিরি। মন্দ না।