|| বাংলার নবাবের ওয়েবসাইটে স্বাগতম ||
আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া | ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া।

বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৩

ভালোবাসি তোমায়, আশরাফুল

২০০৪ সাল। পড়াশুনার কারণে আমি তখন মেসে থাকতাম। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আমার বরাবরই অনীহাএত দীর্ঘ সময়ে নিয়ে খেলার কারণেই সম্ভবত। কিন্তু সেদিন কি মনে করে কলেজে না গিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচটি দেখতে শুরু করলাম। ব্যাটিং-এ তখন আশরাফুল। বাংলাদেশের ক্রিকেট-আকাশে তখন একটাই তারা। কি যেন এক ঐশ্বরীক শক্তি পেলেন তিনি। খেলছেন হাত খুলে।

কিন্তু মনে এক অজানা আশংকা। আশরাফুল তো! এই বুঝি আউট হয়ে যাবেন। সময় গড়াতে থাকলো। খেলতে লাগলেন আশরাফুল, আমাদের আশরাফুল। ...২০ ...৩০ ...৪০ বেড়ে চলেছে রান-সংখ্যা। সমস্ত শংকাকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে দোর্দন্ড প্রতাপে ব্যাট করছেন আশরাফুল। চার আর ছয় –এর সে এক অপূর্ব সমন্বয়।

দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং নৈপূন্যে আমরা সবাই তখন উদ্বেল, মাতোয়ারা। প্রত্যেকটা শট কি অসম্ভব দক্ষতায় খেলে চলেছেন তা না দেখলে বোঝানো সম্ভব নয়। আশরাফুল তখন আশরাফুল নেই, হয়ে গেছেন ক্রিকেটের রাজপুত্র। সমস্ত ধরণের শটই তিনি খেলছেন দক্ষতার সাথে। ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন সেঞ্চুরী। সেই সময়টাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট সেঞ্চুরী যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মত। সমগ্র বাংলাদেশে তখন আশরাফুলের সেঞ্চুরী উদযাপন শুরু হয়ে গেছে।

যতক্ষণ আশরাফুল ক্রিজে ছিলেন, মাতিয়ে রেখেছিলেন দর্শকদের। প্রতিটা মূহুর্তে মনে হয়েছিলো পৃথিবীর ক্রিকেট ইতিহাসের সবচে’ সেরা ব্যাটিং নৈপূন্য দেখছি। তারপর অনেক ম্যাচ দেখেছি; বিশ্বের ইতিহাসে হয়তো সেগুলো জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু আশরাফুলের সেই হার-না-মানা ১৫৮ রানের ব্যাটিংই আমার কাছে সেরা ব্যাটিং, বেধড়ক ব্যাটিং।

আজ অনেক কষ্ট নিয়ে এই লিখাটা লিখছি। সত্যি কিনা জানিনা; হয়তো একটা ভুল তিনি করেছেন। কিন্তু তিনি আমাদের আশার ফুল। ১৫৮ রানের সেই অনবদ্য ইনিংস অথবা কার্ডিফগাথা ...মনে আছে তো কার্ডিফের কথা? অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০১ বলে ১০০ রান করে তিনি রচনা করেছিলেন ক্রিকেটীয় মহাকাব্য... এসবের সবটুকু কৃতিত্ব আশরাফুলের। বাংলাদেশের ক্রিকেট আজকের উচ্চতায় উঠতে শুরু করেছিলো তার হাত ধরে। বাংলাদেশে ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার পিছনে যারা কারিগরের ভুমিকা পালন করেছিলেন, সেই অন্যতমদের মাঝে আশরাফুল সেরা। উয়ী লাভ ইউ আশরাফুল। ইউ আর আওয়ার হিরো।