|| বাংলার নবাবের ওয়েবসাইটে স্বাগতম ||
আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া | ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া।

সোমবার, ৯ জুন, ২০১৪

বিশ্বকাপ ফুটবল ও পতাকা উত্তোলন

এইবারের বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় পতাকা নিয়ে কোন কিছু লিখবোনা বলে ভেবেছিলাম। চারপাশে যেভাবে এইটা নিয়ে স্ট্যাটাসের ছড়াছড়ি তাতে কিছুটা অবাকই হচ্ছি।

মাত্র কয়েকদিন আগেই ক্রিকেট খেলা চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ  ফিল্ম  ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এর পরিচালক পিযুষ বন্ধ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী যখন ভারতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে স্টেডিয়ামের ভিতরে প্রবেশ করলো তখন এদেরকে কোন উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি।

আবার, অনেকেই দেখি বাংলাদেশে অন্য দেশের পতাকা উত্তোলন করা যায় কিনা তা নিয়ে আবেগঘণ স্ট্যাটাস প্রসব করছেন।

বিশ্বকাপও কিন্তু এদেশের মানুষের কাছে আবেগের বিষয়। আবেগের বিষয় প্রকাশের কিছু মাধ্যম থাকে। প্রশ্ন হলো, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ফলে আমাদের আইনগত বা নীতিগত কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা। এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় ক্লীয়ার করা দরকার।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ফলে যদি বাংলাদেশের প্রতি প্রেম উবে গিয়ে অন্য দেশের প্রতি ভালোবাসা বেশি হয়ে উঠতো, তাহলে স্বাধীনতার পরে অনেকবার এদেশ দখল হয়ে যেতো। ৭১ এর পরে অনেকবার বিশ্বকাপ হয়েছে এবং প্রতিবারই এদেশের ফুটবল প্রেমীরা তাদের পছন্দের দলের পতাকা উত্তোলন করেছে। একটু খোঁজ নিলেই দেখা যাবে, যারা পতাকা উত্তোলন করেন তারা আমার-আপনার ভাই, বোন, বন্ধু, কখনোবা আমি-আপনি নিজেই। এদের সাথে কথা বলে দেখবেন, এরা কেউই আমাদের মাতৃভুমিকে কম ভালোবাসেন না। মাতৃভুমির প্রতি এদের সম্মান, শ্রদ্ধা কোনটাই কম নেই। নিছক বিশ্বকাপটাকে আনন্দময় করে তুলতেই তারা বাসা-বাড়ির ছাদে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা উত্তোলণ করে তাদের সমর্থনের জানান দেয়।

এবার আসি আইনগত বিষয়ে। ভীনদেশের পতাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইনী উপায় হলো, বাংলাদেশের পতাকা সবার উপরে ওড়ানো। রাইট, এই একটা পয়েন্ট আপনি সঠিক ধরেছেন। আমাদের উচিৎ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-ইটালী-ফ্রান্সের পতাকা উত্তোলনের সময় উপরে, ছোট করে হলেও, বাংলাদেশের একটা পতাকা উত্তোলণ করা। তাতে, দেশকে উপরে রাখাও হলো, আর বাধভাঙা আবেগ প্রকাশেও কোন আইনগত বাধা থাকলোনা।

এই পয়েন্টে আমার-আপনার দায় কোন অংশেই কম নয়। কাউকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-ইটালী-ফ্রান্সের পতাকা উত্তোলণ করতে দেখলেই আমরা তাদেরকে বলতে পারি বাংলাদেশের পতাকাও উত্তোলন করতে। আমার বিশ্বাস করি, কেউই তাতে অস্বীকৃতি জানাবেনা।

অতএব, আসুন। বিশ্বকাপের আনন্দ প্রকাশে বাঁধা না দিয়ে তা প্রকাশে সহায়ক হই, আইনী মাধ্যমে, দেশের প্রতি সম্মান রেখেই।


হ্যাপি ফুটবলিং।