বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশান শেষ করার পরে এই কয়দিন বেশ আনন্দের সাথেই কাটছে বলতে হবে। বলছি আমাদের রিইউনিয়ন (Reunion) এর কথা। এটা মুলত Reunion এবং প্রতিষ্ঠার দশ বছর পুর্তি অনুষ্ঠান। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিন এই ২০০৯ সালে এসে দশ বছর পূরণ করলো। দশ বছর পুর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বই ছিলো অসামান্য এবং কিংবদন্তিতুল্য। সকালে র্যা লী করার মধ্য দিয়ে সুচনা হয় অনুষ্ঠানের। এরপর শুরু হয় Formal Session. এই সেশন শেষ হতেই প্রায় দুপুর গড়িয়ে যায়।
তারপর শুরু হয় বহুল প্রতীক্ষিত কালচারাল প্রোগ্রাম। অদ্ভুত সুন্দর এক বিকেল ছিলো এটি। সুর্যের ঠিকরে পড়া স্নিগ্ধ আলো সেই অনন্য সুন্দর বিকেলটাকে যেন শত সহস্র মাত্রায় মহিমান্বিত করেছিলো। ঘনায়মান সায়াহ্নে সুরেলা আবেশে মাতোয়ারা হয়েছিলো উপস্থিত ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরা। সুরের ঐকতান ক্যাম্পাসের সর্বত্র কানায় কানায় ভরিয়ে তারপর ছড়িয়ে পড়েছিলো হৃদয়তন্ত্রীতে। গ্রীক ও রোমান পৌরাণিক কাহিনীর পটভুমিতে দাঁড়িয়ে বর্তমান বিশ্বব্যাবস্থা ও এর সংকীর্ণ পুজিবাদী স্বার্থান্বেষী মহলকে উপহাস করে মঞ্চায়িত নাটকটি যেমন মন কেড়ে নিয়েছিলো সকল দর্শকের, তেমনি তাদের সামনে তুলে ধরেছিলো ভাবনার এক নব দিগন্ত। সময়ের সান্ধ্য প্রসাধন ততক্ষণে শেষ হয়ে এসেছিলো। রাতের তীব্র অন্ধকারে ছেয়ে আসছিলো চারিদিক। তবে মঞ্চের আলো কেবল নয়, পারফর্মারদের চোখ ধাধানো পারফর্ম্যান্স রুখে দিয়েছিলো সেই অন্ধকারকে। একে একে মঞ্চে এসেছিলো রীতি ও শোভনের নৃত্য, সালামের পুঁথি এবং সোনিয়ার ‘কাজরা রে’ গানের সাথে নাচ ও আরো অনেক অনেক প্রিয় গান। দর্শকে দর্শকে পূর্ণ তখন শহীদ মীনারের সম্মুখভাগ। মঞ্চে পারফর্মারদেরপারফর্ম্যান্স, উদ্বেলিত দর্শকের করতালি ও অংশগ্রহণ সৃষ্টি করেছিলো এক নব দ্যোতনার, প্রত্যয়ের। সোনিয়া’র ‘কাজরা রে’ এর কথা উল্লেখ না করলেই নয়। এটা ছিলো বিস্ময়কর, দৃষ্টিনন্দিত, অনুপম এবং অদ্বিতীয়-- এক শ্বাসরুদ্ধকর জমজমাট সাবলীল ও সাহসী ভঙ্গীমা। .............. এভাবে নাচ, গান আর হৈ হুল্লোড়ের মধ্য দিয়ে আমরা উদযাপন করলাম আমাদের ডিসিপ্লিনের প্রথম Reunion এবং দশ বছর পুর্তি অনুষ্ঠান। এ যেন শুধু মাত্র মিলনমেলা নয়; অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যতকে একই মুকুরে দেখার অসামান্য হাতছানি।
যে বিষয়টি সবিশেষ উল্যেখযোগ্য তা হলো রিনো ভাই আর শিপলু ভাই এর উপস্থিতি। রিনো ভাইকে আগের থেকেই চিনতাম, শিপলু ভাই এর সাথে কথা বলে মনে হলো যেন কতদিনের পরিচয়, অথচ আগে কখনো কথা হয়নি উনার সাথে। এরকম উদাহরণ হয়তো অনেক দেয়া যাবে। মান্না ভাই, নওশাদ ভাই সহ আরও অনেকে যোগ দিতে পারেনি এই Reunion-এ। উনাদেরকে প্রচুর মিস করেছি। প্রজম্মের সাথে প্রজম্মের সেতু বন্ধনে এই আয়োজন তাই সাফল্যের স্বর্ণমুকুট দ্বারা শোভিত। সবশেষে এই পরিজ্ঞাত অনুভুতিতে হৃদয় পরিপূর্ণ হয়েছে যে আমরা আসলে একই সূত্রে গাঁথা, আমাদের সবারই একই নাড়ির টান—আমাদের ইংরেজি ডিসিপ্লিন।