|| বাংলার নবাবের ওয়েবসাইটে স্বাগতম ||
আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া | ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১০

অপ-সংস্কৃতির এই আক্রমন কে রুখবে?


‘থ্রেশোল্ড ভ্যালু’ বা ‘সহ্য ক্ষমতা’ নিয়ে আমি আগেও একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে বলার চেষ্টা করেছিলাম কিভাবে ধীরে ধীরে অশ্লীল এবং অস্পৃশ্য বিষয়গুলোকে আপনার মনের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে আপনার কাছে সহনশীল করে তোলা হচ্ছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিকভাবে জায়গা দখলের পাশাপাশি আপনার মনের জায়গা দখলের যে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিদেশী বেনিয়ার জাত, তার কয়েকটি নমুনা আমি সেখানে দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম।

আমি আগেই বলেছি, আপনার ‘সহ্য ক্ষমতা’কে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে খুব সহজেই আপনার কাছে বিজাতীয় অশ্লীল সংস্কৃতিকে সহনশীল করে তোলা হচ্ছে। আজ আমরা এমনই আরেকটি নমুনা দেখবো। তবে, এবারের ক্ষেত্রটি একটু ভিন্ন ধরণের। ভিন্নতার এই ব্যাপারটার এমন ধরণের যে, খুব বেশি মাত্রায় সচেতন না হলে এই ক্ষেত্রটিতে আপনার মনে প্রশ্ন জাগ্রত হওয়ার কোন সুযোগই নেই।

প্রিম্যারিট্যাল বা এক্সট্রাম্যারিটাল সেক্স আমাদের সমাজে খুবই ঘৃণ্য ও গর্হিত অপরাধ। এটার কথা চিন্তা করতেও এদেশীয় লোকজনের মনে একধরণের ভয় ও অপরাধবোধ জাগ্রত হয়। কিন্তু পশ্চাত্য দেশে এটা খুবই স্বাভাবিক এবং গ্রহনযোগ্য। তাই, সেদেশে এই ধরণের ভয় বা অপরাধবোধ জাগ্রত হওয়ার কোন অবকাশ প্রায় নেই বললেই চলে। মাঝে মাঝে এ ধরণের ঘটনা সেদেশের পত্র-পত্রিকাতে তাই প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু এই ধরণের সংবাদ বা শব্দগুলোর প্রতিনিয়ত ব্যাবহারের দ্বারা যদি আপনার কানে একটা বিশেষ সহনশীলতা তৈরি করা হয়, তাহলে এটা সহজেই বোধগোম্য যে আপনার সংস্কৃতির উপর এটা খুব মেজর একটা আক্রমন।

আর একাজটিই খুব সচেতনভাবে করে চলেছে ‘ডয়েচে-ভেলে’ নামক জার্মানভিত্তিক একটি সংবাদ সংস্থা। কোন সংবাদ ছাপানোর ক্ষেত্রে প্রথমেই যে ব্যাপারটা অগ্রগন্য তা হলো পাঠকের কাছে এর চাহিদা বা গ্রহনযোগ্যতা, যাকে আমরা সাধারণত ‘নিউজ-ভ্যালু’ বলে থাকি। কিছুদিন আগে, ‘ডয়েচে-ভেলে’তে একটা নিউজ ছিলো এরকমঃ ‘শারীরীক সম্পর্কের কারনে এইডস্‌ বাধিয়ে দেওয়ায় আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এক জার্মান সেলিব্রিটি’। (লিংকটি তখন রাখিনি বিধায় দিতে পারছিনা বলে দুঃখিত) আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এদেশের কতজন মানুষ ঐ জার্মান সেলিব্রিটিকে চেনেন? এই সংবাদটির ‘নিউজ-ভ্যালু’ই বা এদেশের পাঠকের কাছে কতটুকু? মুল ব্যাপারটি হচ্ছে আপনার ‘থ্রেশোল্ড ভ্যালু’ বৃদ্ধি। সংবাদটির কোন ‘নিউজ-ভ্যালু’ আপনার কাছে থাকুক বা না থাকুক, এই ধরণের একটা ব্যাপার বা এই জাতীয় শব্দগুলো তো আপনার কাছে গা-সওয়া করে দেওয়া যাচ্ছে সংবাদ প্রকাশের নাম করে!

আজও প্রায় একই রকমের একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে ‘ডয়েচে-ভেলে’। প্রথমে সংবাদটি দেখে আসুন। এবার বলুনতো, পশ্চাত্য দেশের কোন এক দম্পতির এক্সট্রাম্যারিটাল সেক্স আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? অথবা, সেই দম্পতি কতজনের সাথে এক্সট্রাম্যারিটাল সেক্স করলো তাতে আপনার উপকার কী? আসল ব্যাপার ঐ একই। আপনার ‘থ্রেশোল্ড ভ্যালু’ বৃদ্ধি করা, সংবাদ পরিবেশনের নামে বিজাতীয় সংস্কৃতিকে আপনার কাছে সহনশীল করে তোলা।

প্রিয় পাঠক, আসুন সচেতন হই। আমাদের সংস্কৃতির রক্ষক আমরাই। অন্যরা কোনদিন আমাদের জন্য ফুলের গালিচা বিছিয়ে দেবেনা। বিজাতীয় সংস্কৃতি আর এই জাতীয় সকল অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর এখনই সময়।