প্রাইমারী পড়েছি আমি গ্রামের স্কুল থেকে। আমাদের স্কুলটা ছিলো আমাদের বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক পা দূরে। গ্রামের স্কুল হওয়াতে শহুরে রকমারী স্কুল সম্বন্ধে আমার কোন ধারণাই ছিলো না। রকমারী স্কুল বলছি একারণে যে শহরের বিভিন্ন স্কুলে এখন দেখি বোর্ড বই এর পাশাপাশি আরোও হাজার রকমের বই পড়াতে । কিন্তু আমাদের গ্রামের স্কুলে বই বলতে শুধু বছরের শুরুতে স্কুল থেকে দেওয়া বই-এর কথায়ই বুঝতাম। ছোটবেলা থেকেই আমি বেশ একটু পড়ুয়া ছিলাম, যদিও অনার্স বা মার্টার্সের সময় সেই স্বভাবটা আর ধরে রাখতে পারিনি। পড়ুয়া ছিলাম বলেই কিনা জানিনা- নতুন বই পেলেই আরও বেশি পড়তে ইচ্ছা করতো।
যাইহোক, শিরোনামে বলেছি বই-এর ঘ্রাণের কথা। স্কুলে বই দেওয়ার আগেই ঘোষনা দেওয়া হতো কবে নতুন বছরের বই দেওয়া হবে। নতুন বই আনার দিন মনে মনে অনেক ব্যস্ততা বেড়ে যেত। সকাল সকাল স্কুলে যেয়ে বসে থাকতাম। প্রতি বছরই দেখা যেত নতুন আর পুরনো মিশিয়ে এক সেট বই দেওয়া হতো। বই নিয়ে বাড়ি এসেই পড়তে বসে যেতাম। দেখা যেতো, এক সপ্তাহ ধরে কেবল নতুন বইই পড়ছি। নতুন বই-এর ঘ্রাণ শুকতে দারুণ মজা। ঘ্রাণের লোভে প্রথম প্রথম শুধু নতুন বইগুলোই পড়তাম।
স্কুল ছেড়েছি আজ অনেক বছর হলো। এখন আর আমাকে বই দেওয়া হয়না। প্রয়োজনীয় বইগুলো কিনেই পড়তে হয়। স্কুল, কলেজ, তারপর ইউনি’র গন্ডিও শেষ করে ফেললাম। কিন্তু ঘ্রাণ শুকে বই পড়ার লোভ আমার এখনো যাইনি। এখনো নতুন বই হাতে পেলে আগে ঘ্রাণ শুকি, তারপর পড়তে শুরু করি।