![]() |
জেমস্ |
কদিন ধরে ফেইসবুকে ’১১ ব্যাচের র্যাগ ডে’র প্রতি মুহুর্তের আপডেট, ’১১ ব্যাচের ক্লান্তিহীন প্রচারণা: ‘জেমস্ আসছে’, আসছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মাতাতে। কিছুদিন ধরে জেমস্ -এর গানের কালেকশন বাড়িয়ে আমিও প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম; ঝালাই করে নিচ্ছিলাম লিরিকগুলোকে। বেশ কদিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম গুরু’র ষ্টেজ-পারফর্ম্যান্স দেখবো বলে।
বাংলা সঙ্গীতে নিজস্ব স্বকীয়তায় গুরুরুপে আবির্ভুত হয়েছেন অনেকেই। তবে বাংলা পপ সঙ্গীতে গুরু বলতে বুঝি আজম খানকেই। অথচ ’১১ ব্যাচের প্রচারণা, নিজের প্রস্তুতি, প্রতি মুহুর্তের ফেসবুক আপডেট –এর কারণে দেহমনে সঙ্গীত বলতে জেমস্কেই বুঝতেছিলাম, জেমস্ই হয়ে উঠলেন ‘গুরু’।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী সন্ধ্যে সাতটা বা আটটার মধ্যেই জেমস্ ষ্টেজে উঠবেন এমন ধারণা থেকেই ছ’টার মধ্যে ক্যাম্পাসে গিয়ে উপস্থিত হলাম। একে একে লোকাল ব্যান্ডগুলোর পারফর্ম্যান্স দেখতে দেখতে রাত ন’টা বেজে গেলো। অপেক্ষার প্রহর যেন আর শেষ হতে চায় না। কিছুটা বিরক্তও হলাম। আর কত অপেক্ষা!
অপেক্ষার প্রহর আরও বাড়িয়ে রাত প্রায় পৌনে দশটার দিকে স্টেজে উঠলেন গুরু। ক্যাম্পাস তখন কানায় কানায় পূর্ণ। মোর দ্যান টেন থাউজ্যান্ড লোকের সমাগম। একবার পিছন ফিরে তাকালাম; ষ্টেজের চোখ ধাঁধানো আলো শেষ হয়, শেষ হয় না মানুষ।
গিটার বাজাচ্ছেন গুরু। মিউজিক ভেসে আসছে ষ্টেজ থেকে। ঠিক কোন গানটা বাজতে চলেছে ধরতে পারলোনা কেউই। এভাবেই চলে গেলো ২/৩ মিনিট। অডিয়েন্স অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে ষ্টেজের দিকে। হঠাৎ ভেসে আসলো সেই দ্বরাজ কন্ঠ ‘কবিতা...’।
পুরো ক্যাম্পাস গমগম করে উঠলো। উল্লাসে ফেটে পড়লো অডিয়েন্স। যেনে গুরুকে স্বাগত জানানোর জন্যই এতক্ষণ চুপ ছিলো তারা। তুমুল করতালি আর গগনবিদারী চিৎকারে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হলো। ২নং এ্যাকাডেমিক বিল্ডিং থেকে আসা আলোর ঝলকানিতে ক্যাম্পাস তখন রঙিন আলোয় উদ্ভাসিত। গুরু গাইলেন...
কবিতা, তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিও না
কবিতা, এই নিশাচর আমায় ভেবোনা সুখের মোহনা।
দেখবে আমাদের ভালবাসা হয়ে গেছে কখন যেন
পদ্ম পাতার জল।
বেদনা সিক্ত অশান্ত এই মন
খুঁজে ফেরে মেটায় প্রয়োজন
যতদূর জানে ব্যাকুল হৃদয়
নীল বিষের পেয়ালা মনের বাঁধন।
নয়ন গভীরে আঙিনায়
নিবিড়তার ছোঁয়ায় হৃদয় প্রতিমা
কোথায় হারালে বল পাবো তোমায়
বসন্তে মাতাল আমি এক অপূর্ণতায় ।
(হোয়াট আ রয়্যাল বিগিনিং!!!)
![]() |
জেমস্ |
দীর্ঘ অপেক্ষার বিরক্তি মুহুর্তেই উবে গেলো। সবগুলো প্রিয় গান গাইলেন গুরু। মাতলেন, মাতালেন।
(ফটো ক্রেডিটঃ এখানে)